বুধবার, ০২ Jul ২০২৫, ০১:২২ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

তামিমের নেতৃত্বে প্রথমবার বিপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

খেলাধুলা ডেস্ক:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে হ্যাটট্রিক করতে দেয়নি ফরচুন বরিশাল। দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠে বিপিএলের নতুন রাজা হয়েছে তারা। আজ ফাইনালে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়নদের ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বরিশাল।

এতে পুরোনো এক প্রতিশোধও নেওয়া হয়েছে বরিশালের। ২০২২ বিপিএলে কুমিল্লার কাছেই ১ রানে হেরে শিরোপা বঞ্চিত হয়েছিল তারা। এবার তাদের হারিয়েই শিরোপা উদ্‌যাপন মেতেছেন তামিম ইকবাল-মুশফিকুর রহিমরা। তামিমের দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বিপিএলের ইতিহাসে বরিশালের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রথম শিরোপাও জিতল। এবারের আগে সব মিলিয়ে তিনবার ফাইনালে খেলে প্রতিটিতেই হেরেছিল বরিশালের ফ্র্যাঞ্চাইজিরা।

১৫৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত শুরু পায় চ্যাম্পিয়নরা। উদ্বোধনী জুটিতেই ৭৬ রান তোলেন দুই ওপেনার তামিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনের ব্যাটিং তাণ্ডবে তখন কুমিল্লার খেলোয়াড়দের হতাশ চেহারা ক্যামেরার লেন্সে বারবার ধরা পড়ছিল। বিশেষ করে অধিনায়ক লিটন দাসের। ৩৯ রান করে যখন তামিম আউট হলেন, তখনো খুশি ছিলেন না লিটন। উল্টো উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে শাসাতে দেখা যায়।

মঈন আলীর করা প্রথম ওভারের শেষ বলকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারতে গিয়ে বোল্ড হন তামিম। অথচ, দলীয় অষ্টম ওভারে আক্রমণাত্মক না হলেও পারতেন তিনি। কেননা, তার আগে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বলে ৬, ৪, ৪ মেরে নিজের কাজটা সেরেই রেখেছিলেন। কিন্তু লোভের ফাঁদে পা দিয়ে ২৬ বলে সমান ৩ চার ও ৩ ছক্কার সাজানো ইনিংসটির মৃত্যু ডেকে আনেন। তার আগে ৪৯২ রান নিয়ে এবারের টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও হন তিনি।

বরিশালের অধিনায়কের বিদায়ের পর দ্রুত ফিরে যান আরেক ওপেনার মিরাজও। বাংলাদেশি অলরাউন্ডারও আউট হন মঈনের ফিরতি ওভারেই। ইংলিশ স্পিনারের বলকে লং অফে ছক্কা মারতে গিয়ে জনসন চালর্সের হাতে তালুবন্দী হন তিনি। তাঁর ২৯ রানের ইনিংসটিতে ছিল এক চার ও ২ ছক্কা।

নিজের তৃতীয় ওভারে আরেকটি উইকেটের সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন মঈন। তবে লং অফে কাইল মায়ার্সের কঠিন ক্যাচটা ধরতে পারেননি বদলি ফিল্ডার রিশাদ হোসেন। বাংলাদেশের লেগ স্পিনার যখন ক্যাচ মিস করেন, তখন বরিশালের রান ছিল ২ উইকেটে ৯৬ রান। পরে জীবন পেয়ে ১৫তম ওভারে স্বদেশি রাসেলকে সমান দুটি চার ও ছক্কা মেরে ২০ রান নিয়ে ম্যাচ প্রায় শেষ করে দেন মায়ার্স।

অবশ্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। দল যখন জয় থেকে ১৪ রান দূরে তখনই মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হন মায়ার্স। ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে ৩০ বলে ৪৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। ২ ছয় ও ৫ চারে ইনিংসটি সাজান ১৫৩.৩৩ স্ট্রাইকরেটে। ১৭তম ওভারের শেষ বলে আরেকটি উইকেট নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন মোস্তাফিজ। মুশফিকুর রহিমকে ১৩ রানে আউট করেন বাঁহাতি পেসার।

তাতেও অবশ্য কাজ হয়নি কুমিল্লার। ১৮ বলে ১১ রানের সমীকরণটা মিলিয়ে নেন বরিশালের মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৭) ও ডেভিড মিলার (৮)। অবশ্য ১৮তম ওভারে ২ রান দিয়ে ম্যাচের উত্তেজনা বাড়িয়ে দেন নারাইন। তবে ফিরতি ওভারের শেষ বলে মোস্তাফিজকে ৪ মেরে দলকে জয় এনে দেন মিলার। এতে ৬ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয় বরিশাল।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই কাইল মায়ার্সের বলে ওবেদ ম্যাককয়ের দুর্দান্ত ক্যাচে ড্রেসিংরুমে ফেরেন সুনীল নারাইন (৫)। পরে দ্রুত ফিরে যান তাওহীদ হৃদয় (১৫) ও লিটনও (১৬)। ৪২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসা কুমিল্লাকে টেনে তুলতে পারেননি মিডল অর্ডার ব্যাটার চার্লস জনসনও (১২)।

তার মধ্যে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে আসে মঈন আলীর (৩) রান আউট। সরাসরি থ্রোয়ে ইংলিশ অল রাউন্ডারকে সাজঘরে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে একটা সময় তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৭৯ রান। সেখান থেকে ষষ্ঠ উইকেটে জাকের আলী অনিকের (২০*) সঙ্গে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ২৯ বলে ৩৬ রানের জুটি গড়ার পথে দলকে পৌঁছে দেন শত রানের ঘরে।

সাইফউদ্দিনকে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন মাহিদুল। ৩৫ বলে ২ চার ও ২ ছয়ে দলীয় সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন তিনি। মাহিদুলের বিদায়ের পরেই ঝড় শুরু আন্দ্রে রাসেলের। ইনিংসের ১৯তম ওভারে ফুলারকে মারেন তিন ছয়। সেই ওভারে আসে ২১ রান। তবে সাইফউদ্দিনের করা শেষ ওভারে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি। রাসেলকে স্ট্রাইকে দেখেই হয়তো ভড়কে গিয়েছিলেন বরিশাল পেসার। ৩ ওয়াইড ও ১ নো বলে প্রথম বৈধ বল হতেই দিয়ে দেন ৪ রান। পরে অবশ্য দুর্দান্ত সব ডেলিভারিতে কুমিল্লাকে বেঁধে রাখেন ৬ উইকেটে ১৫৪ রানে। রাসেল ১৪ বলে ৪ ছয়ে অপরাজি থাকেন ২৭ রানে। স্ট্রাইকরেট ১৯২.৮৫। তার মধ্যে এবারের বিপিএলের সবচেয়ে লম্বা ৯৮ মিটারের ছয়টি মেরেছেন কুমিল্লার ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION